“বাক্তিগত কথা, কিছু জিজ্ঞাসা ও একরাশ আক্ষেপ”

বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা চার রুমমেট একসাথে থাকি। তার মধ্য দুই জন হিন্দু, দুই জন মুসলিম। ভগবানের অশেষ কৃপায় কোন দিন আমাদের মধ্য ধর্ম নিয়ে কুতর্ক হয় নি। একে অপরের ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকেই আমরা এক সাথে থাকি। এই বছর রমজান মাসে আমার এক রুমমেট হুজুর হয়ে গেছে। নিয়মিত নামাজ-কালাম আর দাড়ি রেখে এলাহি অবস্থা। এখন আর সে আগের মত English movie দেখতে পারে না, নাটক দেখতে পারে না, কার্ড খেলতে পারে না; অথচ তার মনে তীব্র আকাঙ্খা বিরাজিত রয়েছে। তাই মাঝে মাঝে খুব দুঃখ প্রকাশ করে। ওর এই অবস্থা দেখে আমার নিজেরই খারাপ লাগে…। তাই একদিন জিজ্ঞাসা করলাম; “আচ্ছা এত সংযম(!!!) তুমি কিসের জন্য করছো; যেহেতু তুমি আগের মত সব কিছু করতে পারছো না ।

উত্তরে সে আমাকে বলল, “এই জন্মে যদি আল্লার নেক বান্ধা হতে পারি, তাহলে মৃত্যুর পর আল্লা আমাদের জন্য “হুরের” বাবস্থা করবে। এই হুর অর্থ সুন্দরী নারী; যাদের সৌন্দর্য ১০০০গুন বেশি। বেহেশতে একজন পুরুষ minimum ৭০ জন ও maximum ২৫লক্ষ করে হুর পাবে(!!!!!)।” আরও অনেক কিছুই বলল; কিন্তু আমি লিখতে পারলাম না বলে দুঃখিত।

 

পরিশেষে আমার প্রশ্ন হল>> এটাই কি ইসলাম ধর্মের শেষ ঠিকানা। বেহেশতে “হুর” পাওয়ার জন্য ও মজাদার জীবন যাপন করার জন্য এদের এত জিহাদ???? এরা আসলে কি চায়, এরা নিজেরাও জানে না? প্রশ্নগুলো আমরা ওই বন্ধুকেও করলাম। কিন্তু কিছুদিন ধরে হুজুর হওয়ায় সে কোন যথাযথ উত্তর দিতে পারে নাই।

 

[পাদটীকাঃ এই সব কথা শোনার পর খুব কষ্ট ও করুণা হল ওইসব হিন্দু ছেলে মেয়েদের প্রতি যারা আজ নিজ ধর্মের যথার্থ সংস্কারের অভাবে পথহারা, এতিম শিশুর ন্যায় দিকভ্রষ্ট হয়ে মরীচিকার আশায় “সনাতন ধর্ম” ত্যাগ করে।

শ্রী চৈতন্যমহাপ্রভূ’  একটা কথা বলছিল;

“ন ধনং ন জনং ন সুন্দরীং

কবিতাং বা জগদীশ কাময়ে ।

মম জন্মনি জন্মনীশ্বরে

ভবতাদ্ভক্তিরহৈত কী ত্বয়ি।।”

 -‘হে সর্বশক্তিমান ভগবান, ধনসম্পদ সংগ্রহে কিংবা সূন্দরী লাভে আমার কোনই বাসনা নেই । অনুগামী সংগ্রহরও আমার কোন বাসনা নেই ।আমার বাসনা শুধু ইহজীবনে তথা জন্মজন্মান্তরে আপনার প্রেম ভক্তির অহৈতুকী কৃপালাভ যেন করতে পারি’।

  মূলত,  এটাই আমাদের সনাতন ধর্মের মূল উদ্দেশ্য। যার চরম লক্ষ্য হচ্ছে মুক্তি। সনাতন ধর্ম এমন একটি রুপান্তর প্রক্রিয়া, যা পশুকে মানুষে ; মানুষকে দেবতায় এবং দেবতাকে ঈশ্বরে বিকশিত করে ।]

এখানে আপনার মন্তব্য রেখে যান